আসসালামু আলাইকুম টেক জনগণ, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সকলে ভালো আছেন। আজকের এই ব্লগে আপনাদের সঙ্গে আমি আলোচনা করব ভার্চুয়ালাইজেশন (Virtualization) কি? ভার্চুয়ালাইজেশন এর সুবিধা এবং প্রকারভেদ নিয়ে। তো চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক;
আমরা একটা জিনিস হয়তোবা সকলেই জানি, যেকোনো একটা ব্যবসার ক্ষেত্রে হোক বা অন্য কোন কাজে হোক, যখন সেই কাজের হারটি বৃদ্ধি পায় তখন কিন্তু দায়িত্বটাও বাড়ে। এক কথায় যত বেশি ব্যবসা বাড়বে আইটি কোম্পানি গুলোর ক্ষেত্রে, তাদের সামনে আরো অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আসবে এবং এটি সম্মুখীন হতে হবে। আর যদি আইটি এর এই সেক্টরের সাথে আপনাকে তাল মিলিয়ে চলতে হয় তবে আপনাকে অবশ্যই, আপনার যে কাজের প্রতি তৎপরতা আছে, এটিকে আরো অনেক বেশী উন্নত করতে হবে। তাছাড়া আপনি তাল মিলিয়ে চলতে পারবেন না। আপনার প্রতিটি গ্রাহক হিসাবে আপনার প্রতিটি কর্মচারী এবং আপনার সঙ্গে যারা কাজ করে থাকে, তারা সব সময় আপনার থেকে আধুনিক থেকে আধুনিকতার যেসকল এপ্লিকেশন আছে, এগুলোই প্রত্যাশা করে থাকে। সমস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যে লোক গুলো আছে, তারা সব সময় নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করতে চায়, আর এই কারণে তারা তাদের সম্পূর্ণ কাজ যে সকল আইটি কোম্পানি আছে তাদেরকে দিয়ে দেয়। আর সকল কোম্পানির চাহিদা মেটাতে মেটাতে একটা সময় এই আইটি কোম্পানিগুলো চাপ সহ্য না করতে না পেরে তাদের অবকাঠামোগুলোকে আরো অনেক বেশি জটিল করে তুলছে। আর এই ধরনের ক্ষেত্রে ভার্চুয়ালাইজেশন (Virtualization) আপনার সকল আইটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সাহায্য করে থাকে।
এই ধরনের অসুবিধাগুলি বেশিরভাগ আসে, বর্তমানে কম্পিউটারগুলির যে অবকাঠামো আছে সেগুলির ফলে। বর্তমানে যতগুলো কম্পিউটার তৈরি করা হচ্ছে, সব কম্পিউটারে ডিজাইন করা হচ্ছে শুধুমাত্র একটি অ্যাপ্লিকেশন এবং একটি মাত্র অপারেটিং সিস্টেম এক সাথে চালাতে পারবে এর উপর নির্ভর করে।
এর অর্থ হল, এমনকি ছোট ডেটা সেন্টারগুলিকে অনেকগুলি সার্ভার স্থাপন করতে হবে যা প্রতিটি ধারণক্ষমতার মাত্র 12 শতাংশে অপারেটিং করে এবং যেটি কোনও মান অনুসারে অত্যন্ত অদক্ষ। আর এই সমস্যার সমাধানে সবথেকে বড় ভূমিকা রাখে ভার্চুয়ালাইজেশন (Virtualization)। কেননা ভার্চুয়ালাইজেশন একের অধিক অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে একটি সার্ভারে চালানোর জন্য সক্ষম করে দেয়।
“ভার্চুয়ালাইজেশন (Virtualization) হল-- ভার্চুয়াল অ্যাপ্লিকেশন, সার্ভার, স্টোরেজ এবং নেটওয়ার্কের মতো বিভিন্ন জিনিসের একটি সফ্টওয়্যারভিত্তিক ভার্চুয়াল উপস্থাপনা তৈরি করার কৌশল।"
ভার্চুয়ালাইজেশনের অনেক সুবিধা রয়েছে। উল্লেখযোগ্য খরচ সাশ্রয় তৈরি করার জন্য ভার্চুয়ালাইজেশন পদ্ধতি আইটি তৎপরতা, নমনীয়তা এবং মাপযোগ্যতা বাড়াতে পারে। ভার্চুয়ালাইজেশন কৌশল ব্যবহার করে ব্যবসাগুলির কাজের চাপের গতিশীলতা, আইটি কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সংস্থানগুলির প্রাপ্যতা সহজ করে তোলে। ভার্চুয়ালাইজেশনের অতিরিক্ত সুবিধার মধ্যে রয়েছে:
বেশিরভাগ আইটি সংস্থা একাধিক সার্ভার স্থাপন করে কারনে, সেখানে x86 সার্ভারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। প্রতিটি সার্ভার তাদের ক্ষমতায় কাজ করে এবং আজকের উচ্চ সঞ্চয়স্থান এবং আইটি সংস্থাগুলির প্রক্রিয়াকরণের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে চায়।
ভার্চুয়ালাইজেশন হল, হার্ডওয়্যার কার্যকারিতা অনুকরণ করতে এবং সঠিক কাজের পরিস্থিতির জন্য একটি ভার্চুয়াল কম্পিউটার সিস্টেম তৈরি করতে সফ্টওয়্যারের উপর নির্ভর করে। এটি ব্যবসাগুলিকে একক সার্ভারে একাধিক অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশন সহ একাধিক ভার্চুয়াল সিস্টেম চালাতে সক্ষম করে। এটি স্কেলের অর্থনীতি এবং বৃহত্তর দক্ষতার মতো কিছু সুবিধা দেয়।
ভার্চুয়াল মেশিন (Virtual Machine) একটি ভার্চুয়াল কম্পিউটার সিস্টেম, যা একটি অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপ্লিকেশন সহ শক্তভাবে বিচ্ছিন্ন সফ্টওয়্যার ধারক। প্রতিটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ভার্চুয়াল মেশিন সম্পূর্ণ স্বাধীন। যদি আমরা আমাদের একটি কম্পিউটারে একের অধিক VM রাখি, তবে আমাদের শুধুমাত্র একটি কম্পিউটার বা যে কোন একটি হোস্ট প্রয়োজন, যাতে করে আমরা হোস্ট (Host) থেকে আমাদের অপারেটিং সিস্টেমগুলো এবং এপ্লিকেশনগুলোকে কন্ট্রোল করতে পারি।
ভার্চুয়াল মেশিনগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হল, এটি একটি মাত্র ফিজিক্যাল মেশিনে আপনার যতগুলো খুশি ততগুলো অপারেটিং সিস্টেম চালাতে এবং ভার্চুয়াল মেশিনগুলোর মধ্যে এদের যে অপারেটিং সিস্টেমগুলো আছে, সেগুলিকে বিভাজন করতে বা ভাগ করতে অনেক বেশি সাহায্য করে থাকে। ভার্চুয়াল মেশিন এর সমস্ত ফাইলগুলিকে সংরক্ষণ করে এবং ফাইল গুলোকে কপি পেস্ট বা সেভ করে রাখার কাজগুলিকে সম্পাদন করে থাকে।
তিনটি প্রধান ধরনের ভার্চুয়ালাইজেশন নিচে দেওয়া হল:
সার্ভার ভার্চুয়ালাইজেশন একাধিক অপারেটিং সিস্টেমকে একসাথে পরিচালনা করে এবং এতে অনে হোস্ট মেশিন থাকে। এটির কিছু মূল সুবিধা রয়েছে যা নীচে দেওয়া হল:
এটি অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে একটি ভার্চুয়াল নেটওয়ার্ক বা একটি ভার্চুয়াল কম্পিউটারে চালানোর অনুমতি দেয়, যেন তারা একটি ফিজিক্যাল নেটওয়ার্কে চলে এবং বৃহত্তর অপারেশনাল সুবিধা ভার্চুয়ালাইজেশনের সমস্ত হার্ডওয়্যারগুলো উপলব্ধি করতে পারে। এই ধরনের ভার্চুয়ালাইজেশন লজিক্যাল নেটওয়ার্কিং ডিভাইস (যেমন লজিক্যাল পোর্ট, সুইচ, রাউটার, ফায়ারওয়াল, লোড ব্যালেন্সার, ভিপিএন ইত্যাদি) এবং আরও অনেক কিছুর সুবিধা দিয়ে থাকে।
ডেস্কটপ ভার্চুয়ালাইজেশন, তার আইটি সংস্থাগুলিকে কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তা এবং বিভিন্ন উদীয়মান সুযোগের পরিবর্তনে দ্রুত সাড়া দিতে সক্ষম। ভার্চুয়ালাইজড ডেস্কটপ এবং অ্যাপ্লিকেশনগুলিকে দ্রুত শাখা অফিস এবং মোবাইল কর্মীদের কাছে বিতরণ করা যেতে পারে।
অবশেষে বলা যায়, ভার্চুয়ালাইজেশন (Virtualization) একটি যুগোপযোগী পরিবর্তন নিয়ে আসবে আমাদের দেশের আইটি সেক্টরে, তাই এখনই সময় আমাদের দেশে ভার্চুয়ালাইজেশন (Virtualization) টেকনোলজি ইমপ্লিমেন্ট করা এবং আমাদের আইটি সেক্টরকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
© Copyright 2021 Tech Ethical All rights reserved
Social Plugin